শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের সমুদ্র সৈকতে ৭ ফুট লম্বা একটি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। তবে ডলফিনে শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত-বিক্ষত দাগের চিহ্ন রয়েছে।
রবিবার দুপুর ২টায় টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার হলবনিয়া সৈকত এলাকায় ডলফিনটি ভেসে এসে আটকা পড়ে।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বন বিভাগের শীলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছেন। পরে বনবিভাগ লোকজন ডলফিনটি উদ্ধার করে মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম বলেন, দুপুরে জোয়ারের পানিতে ডলফিনটি ভেসে এসেছে। ৭ ফুট লম্বা ডলফিনটির শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত রয়েছে। একদিন আগে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন।
স্থানীয় জেলে আব্দুল হামিদ বলেন, কোনো কিছুর সঙ্গে আঘাত পেয়ে ডলফিনটি হয়তো মারা গেছে। অনেক সময় সমুদ্রে জেলেরা ছেঁড়া জাল ফেলে দেন। ছেঁড়া জালের সঙ্গেও আটকে এসব সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু হতে পারে। ছেঁড়া জাল, প্লাস্টিক সমুদ্রে ফেলা বন্ধে জেলেদের সচেতন করা দরকার। সমুদ্রের সম্পদ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। আর তা না করতে পারলে সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে থাকবে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কেন্দ্র প্রধান ড. শফিকুর রহমান বলেন, দুপুরে ভেসে আসা পোর্পোইসটি দেখতে ইরাবতী ডলফিনের মতো। জলজ স্তন্যপায়ী এ প্রাণী ইন্দোপ্যাসিফিক ফিনলেস পোর্পোইস হিসেবে পরিচিত।এর বৈজ্ঞানিক নাম নিওফোকেনা ফোকেনয়েডস। ফিনলেস পোর্পোইস একটি ছোট জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং দেখতে অনেকটা ইরাবতী ডলফিনের মত কিন্তু এদের পৃষ্ঠীয় পাখনা থাকে না। বাচ্চা অবস্থায় কালো রঙের হলেও বয়সের সাথে রঙ বিবর্ণ হয়ে যায়। এরা ৫-৬ফিট লম্বা হয়। এদের মজবুত শরীর টেপা ফ্লুকের মত এবং মাথা অনেকটা গোলাকার। এই প্রানীটি অগভীর জল, জলাভূমি এবং মোহনা পছন্দ করে। এদেরকে সাধারণত এশিয়ার ইয়াংজি নদীতে, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরে পাওয়া যায়। প্রায়শই এদেরকে বাংলাদেশ, ভারত, চায়না, ইন্দোনেশিয়া, জাপান এবং কোরিয়ায় দেখা যায়।
প্রধান ড.শফিকুর রহমান বলেন, এরা সাধারণত একাকী চলাফেলা করতে পছন্দ করে কিন্তু মাঝেমধ্যে খাদ্য গ্রহণের সময় এদেরকে দলবব্ধ অবস্থায় দেখা যায় যা : ৫-১২ টি বা ৫০ টির অধিক একত্রে দেখা যায়। এরা মাছ, স্কুইড, চিংড়ি, অক্টোপাস এবং মাঝে মাঝে সামুদ্রিক উদ্ভিদও খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এরা সাধারণত বসন্তে বা গ্রীষ্মে বাচ্চা প্রসাব করে এবং বাচ্চারা জন্মের পর মায়ের পিঠে লেগে থাকতে দেখা যায়। এই উপকূলীয় প্রাণীর জন্য প্রধান হুমকি মাছ ধরার জালে আটকে পড়া, নৌকার সাথে সংঘর্ষ হওয়া, শব্দ ও জলদূষণ, বাধ, পোতাশ্রয় এবং অন্যান্য নির্মাণ কাঠামো।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply